নিজস্ব প্রতিনিধি(খবর7দিন প্লাস):- শিশু চোর সন্দেহে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গণধোলাইয়ের ঘটনার পর এবার শিশু চোর সন্দেহে গণধোলাইয়ের ঘটনার ঘটলো কাঁকসায়। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।
নিজের অসুস্থ শিশুকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে বেরিয়ে জন রসের শিকার হলেন বীরভূমের ইলামবাজারের এক বাসিন্দা। শুক্রবার সকালে বীরভূমের ইলামবাজার থেকে শেখ আইআরুল নামের এক বাসিন্দা মোটরসাইকেলে করে তার অসুস্থ শিশুকে নিয়ে পানাগড় মোড়গ্রাম রাজ্য সড়ক ধরে কাঁকসার ১১ মাইলে চিকিৎসকের কাছে যাবার পথে। কাঁকসার বিল পাড়ার কাছে তার বন্ধুদের সাথে দেখা হলে তিনি রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে বন্ধুদের সাথে কথা বলার পর ফের মোটর সাইকেলে চেপে এগারো মাইলের দিকে রওনা দিতে যাওয়ার সময় আচমকা এলাকারই কয়েকজন বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে ছেলেধরা সন্দেহে আটকে গণপিটুনি দিতে থাকে। ঘটনার সময় তিন বন্ধু ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলে। তাদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এদিকে ছেলে ধরা পাওয়ার খবর চাউর হতেই আশেপাশের এলাকা থেকে বহু মানুষ ভিড় করেন এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে কাঁকসা থানার পুলিশ দ্রুত পৌঁছে ওই চার ব্যক্তি সহ এক শিশুকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় থানায়।
কাঁকসা থানায় উদ্ধার হওয়া ওই শিশু সহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে ওই শিশুকে নিয়ে তার বাবা নিজেই চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করাতে বেরিয়েছিলেন। এরপরই মাঝ রাস্তায় এলাকার মানুষের জনরসের শিকার হন তিনি। ওই শিশুর পরিবারে খবর দেওয়া হলে সঠিক পরিচয় পত্র নিয়ে কাঁকসা থানায় আসেন পরিবারের সদস্যরা। সচিত্র পরিচয় পত্র দেখিয়ে শেষমেশ রেহাই মেলে সকলের।
শেখ আইয়ারুল জানিয়েছেন, সকাল থেকেই তার শিশুর পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। যার জন্য তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করানোর জন্য বেরিয়েছিলেন মাঝ রাস্তায় কাঁকসার বিল পাড়ায় তারই এলাকার কয়েকজনের সাথে দেখা হয়।। সেখানে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ কথা বলার পর তিনি রাস্তার ধারে জঙ্গলে বাথরুম করেন। এরপর তার শিশুকে কোলে নেওয়ার সময় পেটের যন্ত্রণায় তার শিশু কান্নাকাটি শুরু করলে স্থানীয়রা সন্দেহ করে অন্যের শিশুকে চুরি করতে এসেছে তারা।। সেই সন্দেহ বসে বেশ কয়েকজন ছুটে এসে তাদের ধরে স্থানীয় একটি হোটেলের আটকে মারধর শুরু করে। এর পরেই খবর চাউর হতেই একের পর এক মানুষ সেখানে জড়ো হয় এবং তারাও তাদের মারধর শুরু করে। যদিও বেশ কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। যদি সঠিক সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে না পৌঁছতো তাহলে হয়তো তাদের চারজনকেই পিটিয়ে মেরে ফেলা হতো।। কাঁকসা থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে সঠিক পরিচয় পত্র পাওয়ার পর সকলকে ছেড়ে দেওয়া হলেও গণধোলাইয়ের সাথে যারা যুক্ত ছিল তাদের চিহ্নিত করে তাদের যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করবে।