নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল : লোকসভা নির্বাচনের আগে শিল্পাঞ্চলে কয়লা পাচারকারীদের তৎপরতা তীব্র হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে দলাদলি ও দ্বন্দ্বের কারণে তাদের বস ও সিন্ডিকেট ম্যানেজিং মাস্টাররা বিপাকে পড়েছেন। অপরদিকে বিজেপি নেতারা ক্রমাগত কয়লা চোরাচালানকে টার্গেট করেচলেছেন। একই সঙ্গে চোরাকারবারিদের শিবির থেকেও তাদের মধ্যে বিভক্তির খবর আসছে। অন্যদিকে কুখ্যাত বালি মাফিয়া তারকেশ্বর সিং কয়লার কালো কারবারে প্রবেশ করার কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে ওই ব্যক্তিকে কুলটি এলাকায় কয়লা পাচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ধানবাদের নিসার থেকে এক কয়লা পাচারকারীকে।কুলটির এক পুরানো কয়লা পাচারকারী কিছু কয়লা ভর্তি ট্রাক সরাসরি ঝাড়খণ্ডের এক ব্যবসায়ীর কাছে পাঠিয়েছে এ খবরের পর কুলটির কাজ কে দেখবে তা ঠিক করতে পারছে না কয়লা পাচারকারীরা। তবে এই টানাটানিতে কুলটিতে কয়লা চুরির ব্যবসা কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছে। যেখানে প্রতিদিন ৪০ ট্রাক কয়লা কালোবাজারে যেত, তা কমে দাঁড়িয়েছে পাঁচ থেকে দশ ট্রাকে। তবে এ এলাকার বগদায় চোরাকারবারীদের বসানো কাঁটা ঘরটি নিরাপদ রয়েছে।
এর পাশাপাশি সালানপুর এলাকায়ও ব্যাপকভাবে কয়লা চুরি হচ্ছে। তবে এসএইচও অমিত হাতি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে এই এলাকায় কয়লা চুরি পুরোপুরি রোধ করা হয়েছে। এখানে কোনো চুরির ঘটনা ঘটেনি। অন্যদিকে বিজেপির অভিযোগ তাদের অভিযোগ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো কথা শোনা হয়নি। যেখানে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি এই কয়লা পাচারের জন্য স্পষ্টভাবে তিনজনের নাম উল্লেখ করেছেন। তাদের একজন ইসিএলের বড় কর্মকর্তা, অন্যজন সালানপুরের কান্তা এবং তৃতীয়জন ইসিএলের কয়লা খনিতে কাজ করা আউটসোর্সিং কোম্পানির মালিক। জিতেন্দ্র তিওয়ারি স্পষ্ট করেই এই তিনজনের নাম গণমাধ্যমে উল্লেখও করেছেন।
তবে তিনজনের মধ্যে কেউই এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কিছু বলেননি। অন্যদিকে, বিজেপির অভিযোগে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের শিবদাসন দাসুও কটাক্ষ করেছেন যে যদি কয়লা চুরি হয় তবে কয়লার পুরো ব্যবস্থা কেন্দ্রের। খনির কেন্দ্রের, চোরাচালান তদন্তকারী সংস্থা কেন্দ্রের, খনির নিরাপত্তায় নিয়োজিত সংস্থা কেন্দ্রের। কেন্দ্র জানে কী হচ্ছে। কয়লা পাচারের ঘটনায় বালি মাফিয়া তারকেশ্বরের নাম অনেকটাই উঠে আসছে। তারা বাংলার বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের বালির ব্যবসা চালায়। কয়লা চোরাচালানে জড়িত ট্রাক পাস করার জন্য দেওয়া বিশেষ প্যাড তার তত্ত্বাবধানে তৈরি হচ্ছে বলে জানা গেছে। এই ব্যক্তির নাম বর্তমানে রাজনৈতিক মহলে তুমুল আলোচনা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কুলটি এলাকায় চোরাকারবারিদের মধ্যে টানাপোড়েনের কারণে কয়লা চুরি চলছে ধীর গতিতে। কিন্তু রানিগঞ্জ ও সালানপুর এলাকায় কয়লা চুরি চলছে। এখানে তিনটি রুট দিয়ে চোরাই পথে পাঠানো হচ্ছে। সালানপুরের গোরান্ডি ও মোহনপুর এলাকা থেকে উত্তোলিত কয়লা ঝাড়খণ্ডের জামতারা জেলা হয়ে ধানবাদ-সাহিবগঞ্জ হাইওয়ে হয়ে সোজা ভাগলপুরে যাচ্ছে। অন্যদিকে, রানিগঞ্জের মেজিয়া এলাকা দিয়ে কয়লা সোজা ওড়িশার দিকে যায়। এই পথে কোথাও কারো জন্য কোন বাধা নেই। তদারকির জন্য চোরাকারবারিদের গাড়িও এসব রুটে ঘুরে বেড়ায়।