সাস্থ্য কথা :
জেনে নিন ডিমের ১২ টি উপকারিতা
"আও সিঁখায়ু তুমহে আন্ডে কা ফান্ডা" গান টি অনেকের এ খুব পছন্দ কিন্তু মেনে চলা বড্ড মুস্কিল । আজকাল অনেকেই রোজ ডিম খেতে চান না । কেউ ওজন বেড়ে যাবার ভয়ে , কেউ রক্তে চর্বি বা ফ্যাট এর পরিমাণ কম রাখতে , কেউ আবার হৃদরোগকে ভয় পেয়ে । কিন্তু আসলেই কি ডিম এই গুলোর পরিমাণ বাড়ায় ?
চিকিৎসকেরা কিন্তু অন্য কথা বলেন । তাদের মতে সকালের জল খাবারে একটি ডিম মাসে প্রায় ৩ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন কমাতে পারে !
তাহলে একটু জেনে নেওয়া যাক ডিম এর ১২ টি উপকারিতা ।
১) ছোট্টো একটি ডিম থাকে প্রায় হাজারো রকমের উপাদান । এর ভিটামিন বি১২ , আপনি যা খাবার খান তাকে এনার্জি টে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে ।
২) এর মধ্যে থাকা ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে । ডিমের মধ্যে থাকা কেরোটিনোয়েড , ল্যুটেন , জিয়েক্সেনথিন বয়সকালে চোখের অসুখ ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার সম্ভাবনা কমায় । এই একই উপাদান চোখের ছানি কমাতেও সাহায্য করে ।
৩) এছাড়াও ডিম থেকে ভিটামিন ডি, যা পেশীর ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে , হার মজবুত করে ।
৪) এতে আছে ভিটামিন ই। এটি কোষ এবং ত্বকে উৎপন্ন ফ্রি রেডিকাল নষ্ট করে দেয় । এবং স্কিন ক্যানসার প্রতিরোধ করে ।
৫) ডিমের সবথেকে বড়ো গুণ হলো এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে । সকালে জল খাবারে রোজ একটি ডিম মনে , সারাদিন আপনার খিদে কম পাবে , খাওয়া কম হবে । গবেষণায় দেখা গেছে শরীর থেকে প্রতিদিন প্রায় ৪০০ ক্যলোরি কমাতে পারে সকালের একটি ডিম । অর্থাৎ মাসে ওজন কমার পরিমাণ প্রায় তিন পাউন্ড। সমীক্ষায় দেখা গেছে ডিম প্রায় ৬৫% বডি ওয়েট ,১৬% বডি ফ্যাট , ৩৪% কোমরে জমে থাকা মেদের পরিমাণ কমাতে পারে ।
৬) ডিমে আছে আয়রন, জিঙ্ক যা ফসফরাস । মেনস্ট্রুয়েশন এর জন্য অনেক সময় অ্যানিমিয়া দেখা যায় । শরীর তারাতারি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ডিমের মধ্যে থাকা আয়রন এই ঘাটতি সহজেই মেটাতে পারে । ডিমের মধ্যে থাকা জিঙ্ক শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় । আর ফসফরাস হাড় ও দাঁত মজবুত করে
৭) প্রত্যেক নারীর শরীরে প্রায় কমপক্ষে ৫০ গ্রাম প্রোটিনের দরকার । একটি ডিমে থাকে ৭০-৮৫ কালোরি বা ৬.৫ গ্রাম প্রোটিন যা শরীর কে সুস্থ রাখে ।
৮) ২০০৩ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় একটি সমীক্ষায় দেখিয়েছে অ্যাডোলেশন পিরিয়ডে বা পরবর্তী কালে সপ্তাহে ৬টি করে ডিম নিয়মিত খেলে প্রায় ৪৪% ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব । সাথে এটিও জানিয়েছে যে ডিম হৃদপিণ্ডে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না । ফলে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভবনাও অনেকটাই কম থাকে ।
৯) শরীরে সুস্থ রাখার আরও একটি জরুরি উপাদান কোলাইন। কোলাইনের ঘাটতি হলে অনেক সময় কার্ডিওভাসকুলার বা লিভার এর অসুখ বা নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার দেখা দিতে পারে । একটি ডিমে প্রায় ৩০০ মাইক্রোগ্রম কোলাইন থাকে । যা কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম , স্নায়ু , যকৃৎ ও মস্তিষ্ককে নিয়ন্ত্রণে রাখে ।
১০) নতুন সমীক্ষায় জানা গিয়েছে , ডিম , কোলেস্টরল বাড়ায় না । দিনে দুটো ডিম শরীরের লিপিড প্রোফাইলে কোনও প্রভাব ফেলে না। বরং ডিম রক্তে লোহিতকনিকা তৈরি করে।
১১) প্রোটিন শরীরে গঠন করে । আর প্রোটিন তৈরিতে সাহায্য করে অ্যামিনো অ্যাসিড । ২১ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড এই কাজে প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু আমাদের শরীর প্রয়োজনীয় ৯ টি অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি করতে পারে না । তার জন্য আমাদের প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়। খাবারের মধ্যে এই প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট হলো ডিম। যা ঝটপট শরীরে প্রোটিন উৎপাদন করতে পারে ।
১২) নখ ভেঙে যাচ্ছে চটপট ? নাকি চুলের স্বাস্থ্য একেবারেই বেহাল ? চোখ বন্ধ করে রোজ ডিম খেয়ে যান । ডিমের মধ্যে থাকা সালফার ম্যাজিকের মতো চুলের আর নখের মান উন্নত করবে ।
ফলে আর ডিম খেতে ফাঁকি নয় । শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন অন্তত একটি করে রোজ ডিম খাওয়া খুবই উপকারী ।