চন্দ্রপৃষ্ঠে অশোক স্তম্ভ ও ISRO-র লোগোর পড়েনি স্পষ্ট ছাপ! তাও এই কারণে খুশি বিজ্ঞানীরা, সামনে এল বড় তথ্য

চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3)-এর রোভার প্রজ্ঞানের (Pragyan) পেছনের চাকায় ভারতের জাতীয় প্রতীক অশোক স্তম্ভ এবং ISRO-র (Indian Space Research Organisation) লোগো রয়েছে। যদিও, চন্দ্রপৃষ্ঠে এই দু’টির “স্পষ্ট” ছাপ ফেলা যায়নি। তবে, বিজ্ঞানীদের মতে এটি একটি ভালো লক্ষণ। যেটি আসলে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে মাটির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে একটি নতুন ধারণা দিয়েছে। উল্লেখ্য যে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর অঞ্চলটি ভবিষ্যতের অনেক মিশনের সাক্ষী হতে চলেছে। কারণ এখানে জল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি, চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের মাটি সম্পর্কে নতুন তথ্য চাঁদে জীবনের উপস্থিতির অনুমান সম্পর্কে সম্পন্ন হতে চলা মিশনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হতে পারে।


টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক রিপোর্টে ISRO চেয়ারম্যান এস সোমনাথকে উদ্ধৃত করে এই বিষয়টি জানানো হয়েছে। যেখানে এস সোমনাথ জানিয়েছেন, “অশোক স্তম্ভ এবং লোগোর অস্পষ্ট ছাপ একটি নতুন উপলব্ধি দিয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই জানি যে এটি ( চাঁদের মাটি) ভিন্ন, কিন্তু আমাদের খুঁজে বের করতে হবে কোন বিষয়টি সেটিকে আলাদা করেছে। চাঁদের মাটি ধুলোবালি যুক্ত নয়, বরং অনেকটাই নরম ধরণের। আমাদের সন্ধান এই দিকেই রয়েছে।”


এদিকে, সামনে আসা এই চিত্রগুলি ISRO স্যাটেলাইট ইন্টিগ্রেশন অ্যান্ড টেস্ট এস্টাব্লিশমেন্ট দ্বারা নির্মিত লুনার সয়েল সিমুল্যান্ট (LSS)-এ পরীক্ষা করা হয়েছিল। যেখানে সেটি একটি স্পষ্ট ছাপ রেখেছিল। ইউএস অ্যাপোলো প্রোগ্রাম দ্বারা একত্র করা চাঁদের মাটির নমুনার সাথে মিল করার জন্য এলএসএস তৈরি করা হয়েছিল। এই মাটির নমুনা চাঁদের নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে নেওয়া হয়েছিল। এদিকে, ISRO-র চন্দ্রযান-৩ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করেছে। এমতাবস্থায়, চাঁদের বিভিন্ন অংশের মাটিও আলাদা ধরণের।


চাঁদে পাওয়া গেছে আলগা মাটির চিহ্ন: ওই রিপোর্টে ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির (পিআরএল) নির্দেশক অনিল ভরদ্বাজকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, “আমরা খুব স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি যে, রোভারের চলাচলের কারণে চাঁদের পৃষ্ঠে লিক তৈরি হচ্ছে। ল্যান্ডিং সাইট এবং রোভার চলাচলের স্থানের চারপাশে তোলা ফটোগুলি দেখায় যে রোভারের চলাচলের কারণে সৃষ্ট লিকটি প্রায় এক সেন্টিমিটার গভীর। ল্যান্ডারের পা (বিক্রম ল্যান্ডারের চারটি পা) চন্দ্রপৃষ্ঠে বসে যাচ্ছে। যা নির্দেশ করে সেখানকার মাটি আলগা রয়েছে। আমরা যত গভীরে যাব, মাটি তত ঘন হবে।”


কবে ঘুম থেকে উঠবে প্রজ্ঞান এবং বিক্রম: এদিকে প্রজ্ঞান এবং বিক্রমের ঘুম থেকে জেগে ওঠার বিষয়ে ISRO-র চেয়ারম্যান এস. সোমনাথ জানিয়েছেন, “এখনও সেগুলির সাথে কনট্যাক্ট স্থাপন হয়নি। তবে আমরা বলতে পারি না যে এখন প্রজ্ঞান এবং বিক্রম কাজ করবে না। আমরা একটি পূর্ণ চন্দ্র দিনের (পৃথিবীর ১৪ দিন) জন্য অপেক্ষা করব এবং যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাব। এই সময়কালে, সূর্যের আলো চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ক্রমাগত পড়বে এবং তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। যার ফলে ল্যান্ডার এবং প্রজ্ঞানের যন্ত্রগুলিকেও উত্তপ্ত করবে। তাই ১৪ তম দিনেও দু’জনেই ঘুম থেকে জেগে উঠতে পারে। এখন সম্পূর্ণ ১৪ দিনের জন্য চেষ্টা করা এবং অপেক্ষা করা ছাড়া আমাদের যোগাযোগ স্থাপনের আর কোনো উপায় নেই।”

নবীনতর পূর্বতন